১। সিমেন্টের তৈরী এই পণ্যগুলো ইউনিক
আমরা সাধারণত এমন কিছু খুজি যেটা আর কারও কাছে থাকবেনা, শুধুই আমার কাছেই থাকবে। এমন হওয়াটা সাভাবিক, কারন আমার কাছে যে জিনিসটা আছে সেটা যদি এভেইলাবল হয় তাহলে এটা এক্সট্রা কোন ভ্যালু দেয়না বা আমার কালেকশন যে খুব আকর্ষণীয় সেটা বোঝায় না। ইউনিক জিনিসের প্রতি সবারই একটা আকর্ষণ থাকে। আমরা সবাই চেষ্টা করি এমন একটা শোপিচ বা ফুলদানি ঘরে রাখতে যা আগে কেউ দেখেনি এবং খুব সহজে দেখা যাবেনা।
হোয়াইট সিমেন্টের তৈরী শোপিচ ও ফুলদানিগুলো মার্কেটে পাওয়া যায়না। যদি আপনি কখও ২/১ পিচ দেখে থাকেন- সেটা সাইজে এতই ছোট যে ওটার ভিতর ছোট্ট একটা ক্যাটাস ছাড়া অন্য কিছু রাখতে পারবেন না। সুতরাং বলাই যায় যে, সিমেন্টর তৈরী কনক্রিটের শোপিচ ও ফুলদানিগুলো সতিই ইউনিক।
২। কাস্টম ডিজাইন
টিভিতে-নাটক-সিনেমায় যে ডিজাইনগুলো দেখেন, কারোর ঘরে গেলে সেই ডিজািইনগুলোই দেখেন, দোকানে কিনতে গেলে সেই একই ডিজাইনগুলোই দেখেন, সেইম ডিজাইনের সিরামিক্সের জিনিস দেখতে দেখতে চোখ ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। আপনি যদি ১০টি ঘর ভিটিজ করেন নিঃসন্দেহে অন্তত ২টি শোপিচ বা ফুলদানি আপনি কমন পাবেন, কারন শোপিচের দোকানগুলো চিরোচেনা কিছু সিরামিক ও কাচের তৈরী পণ্য রাখে। প্রতি দোকানদার প্রতিটা ডিজাইনের জিনিস ২০-৩০টি করে রাখে। সিমেন্টের তৈরী পণ্যগুলো কাস্টম ডিজাইন হয়।
আপাতত দেখানুযায়ী এগুলো ফ্যাক্টরীতে প্রস্তুত হয়না, কুটির শিল্পের মাধ্যমে ইউনিকনেস নিয়ে তেরী হয়। বাজারের সিরামিক্স বা কাঁচের তৈরী জিনিসের ডিজাইনের সাথে কখনও মিলে গেলেও এটার আলাদা একটা লুক পাবেন, যেটি চকচকা সিরামিক্সের মতো আপনার চোখকে বিরক্ত করবেনা, বরং ওটার দিকে আপনার তাকাতেই মন চাইবে।
৩। কনক্রিটের এই শেপিচগুলো দোকানে পাওয়া যায়না, সহজলভ্য নয়
প্রতি দোকানে আপনি একই আইটেমগুলো দেখতে পাবেন। হ্যাঁ, আমি আপনিকে নিশ্চিত করে বলছি- সবার কাছে প্রায় সেম আইটেমগুলো দেখতে পাবেন, আমি এটা জানি, কারন আমি নিউমার্কেট, চন্দ্রিমাসুপার মার্কেট, চকবাজার গেছি এবং প্রাই সব দোকন ভিজিট করেছি। কিন্তু কনক্রিটের তৈরী এই আইটেমগুলো আপনি কোন দোকানে পাবেন না, এটা সহজলভ্য নয়। আমার জানামতে ইনডোর Flower vase গুলো “সেরা উপহার”-ই প্রথম বাণিজ্যিকভাবে তৈরী করছে। আপনারা একটু খুজে দেখবেন সিমেন্টের তৈরী এই ধরনের জিনিস গুলো মার্কেটে আছে কিনা।
৪। নানারকম বৈচিত্রময় কালারের কম্বিনেশন
সিরামিক্স, কাঁচ বা প্লাস্টিকের পণ্যগুলো সাধারণত এক কালারের হয়ে থাকে, বিশেষকরে সাদা এবং নীল কালারটাই বেশি দেখা যায়। আপনি বলতে পারেন- এক কালারই তো ভালো এটা স্ট্যান্ডার্ড, কিন্তু সব সময় সেইম সাদা-মাটা কালার আপনার চোখকে সন্তুষ্ট করতে পারবেনা একইবাবে আপনার অতিথি-মেহমানদেরকেও পারবেনা। কনক্রিটের তৈরী এই জিনিসগুলোতে এক কালার সহ সুইটেবল কালারের কম্বিনেশনে মাল্টিকালার করা হয় যা চোখের দৃষ্টিকে লুফে নেয়।
৫। পছন্দমত রং ব্যবহারের স্বাধীনতা থাকে
ধরুন আপনি একটি ফুলদানি কিনেছেন মার্কেট থেকে যেটিতে সবুজ এবং হলুদ রঙের ডিজাইন করা আছে কিন্তু, আপনার কাছে মনে হচ্ছে যে এখানে সবুজের সাথে হলুদ না হয়ে যদি লাল হতো তবে বেশি সুন্দর লাগতো, তাহলে এখন কি করা; ওটাতো আপনি নিজের মতো কালার দিতে পারছেনা। সিমেন্টের তৈরী জিনিসগুলোতে এই সুযোগটা আপনার থাকবে। আপনি যেকোন সময় আপনার মনের মতো রং করতে পারবেন। একটা বেপার দেখেন- আপনি একটা ফুলদানি অনেকদিন ধরে ব্যবহার করছেন সেটা নষ্ট হচ্ছেনা তাই আপনি ফেলতেও পারছেন না। এদিকে একই জিনিস দেখতে দেখতে আপনি এবং আপনার অতিথিরা বোর হয়ে গেছে। চিন্তা নেইতো এটার লুক চেঞ্জ করার সুযোগ আপনার কাছে আছে। নিজের মতো করে পছন্দমতো ডিজাইনে কালার করে ফেলুন তাতে নিজেরও ভালো লাগবে আর যারা আপনার ঘরে মাঝে মাঝেই আসে তাদের কাছে নতুন কিছু বলে মনে হবে।
৬। দৃষ্টি কেড়ে নেয়, দেখতে সুন্দুর
যেহেতু এগুলো কাচেঁর মতো সহজলভ্য না, সিরামিক্সের মতো কমন ডিজাইনের না, প্লাস্টিকের মতো থার্ডক্লাস ম্যাটেরিয়াল না সেহেতু দেখতে সবার থেকে একটু আলাদা হবে এটাই স্বাভাবিক। সুতরাং, এগুলো সচরাচর দেখা না যাওয়ার কারনে সহজেই সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
৭। এগুলো হ্যান্ডিক্রাফট জাতীয়
সৌন্দর্যের প্রতীক এই জিনিসগুলো হ্যান্ডিক্রাফট জাতীয়, এখানে মেশিনের অস্তিত্ব নেই হাতেই তৈরি হয় তৈরি শোপিস ফুলদানি গুলো। আমাদের দেশের হ্যান্ডিক্রাফটের জিনিসপত্র বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে সেহেতু আপনি বুঝতেই পারছেন এই পণ্যগুলোর কত চাহিদা। ঘর সাজাতে বর্তমানে হ্যান্ডিক্রাফটের পণ্যগুলো মানুষ বেশি পছন্দ করছে কারণ, এগুলো দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি ইউনিক এবং দামেও সস্তা।
৮। সহজে ভঙ্গুর নয়, খুব টেকসই
কনক্রিটের তৈরি এই জিনিসগুলো সিরামিকস ও কাচের তুলনায় অনেক বেশি টেকসই। হোয়াইট সিমেন্ট ও জিপসাম পাউডার এর কম্বিনেশনের মাধ্যমে এই প্রোডাক্ট গুলো তৈরি হয়, আর সিমেন্ট একবার শক্ত হলে কেমন টেকসই হয় তা আপনারা আগে থেকেই জানেন।
৯। ওজন বেশি, স্টাবল
কাচঁ বা সিরামিকসের তৈরি পণ্য গুলো খুব ছোট ধাক্কাতে পড়ে গিয়ে সহজেই ভেঙে যায় কারণ, এগুলো তুলনামূলক বেশ হালক। কংক্রিটের তৈরি শোপিস ও ফুলদানি গুলো বেশ ভারী হয় যার কারণে সহজে পড়েও না এবং ভাঙেও না।
১০। থিকনেস বেশি
অন্যান্য ম্যাটেরিয়ালের জিনিসগুলো অনেক পাতলা তাই পড়তে দেরি আছে কিন্তু ভাঙতে দেরি নাই। সিমেন্টের তৈরি জিনিস গুলোর থিকনেস 5 থেকে 10 মিলিমিটার হয, অনেক সময় তার থেকেও বেশি হয়।
১১। বেলকনিতে ইউজেবল
সবার ক্ষেত্রে ব্যালকনি প্ল্যান্টেশনের জন্য আমরা দেখে থাকি প্লাস্টিকের পাত্র ব্যবহার করতে যা দেখতে মোটেই স্ট্যান্ডার্ড না। অনেক দাম দিয়ে কেনা গাছগুলো ভ্যালুলেস হয়ে যাই শুধুমাত্র এই প্লাস্টিকের পাত্র ব্যবহার করার জন্য। এসব জায়গায় যদি আপনি সিমেন্টের তৈরি পাত্র ব্যবহার করেন তাহলে আপনার ব্যালকনির লুকটাই চেঞ্জ হয়ে যাবে। সবারই আপনার রুচির প্রশংসা করতেই হবে কথা দিলাম।